ওয়াজেদ আলী, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রী কলেজের এ্যাডহক কমিটির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান ও এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী নামের এক জ্যেষ্ঠ প্রভাষক শিক্ষার্থীদের ফরম পূরুনের জমাকৃত ও কলেজ ফান্ডের ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই আত্মসাত ঢাকতেই অধ্যক্ষের চেয়ার নিয়ে রশি টানাটানি করার অভিযোগ তুলেছেন অধ্যক্ষ চেয়ারে বসা মাহবুব আলম সহ একাধিক শিক্ষক। সরেজমিন গেলে এমনই অভিযোগ করেন বর্তমান অধ্যক্ষের চেয়ারে বসা মাহবুব আলম। সেই সাথে সেখানে উপস্থিত অধিকাংশ শিক্ষকও অভিযোগ তোলেন। তবে অর্থ আত্মনাতের অভিযোগ সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান সম্প্রতি মারা যাওয়ার কারনে অস্বীকার করেন সাবেক এ্যাডহক কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান ও এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী এবং ফরহাদ হোসেন। এদিকে এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি চান কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি দ্রæত শিক্ষার পরিবেশ ভালো হোক। জানা যায়, সর্বশেষ চলতি উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট ফরম পূরুন বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ২০ টাকা উত্তোলন করা হয়। এর মধ্যে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৪ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আর অবশিষ্ঠ এক লাখ ৬ হাজার ৩৬৬ টাকার কোন হদিস নেই বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ ও কিছু শিক্ষক। এর আগে বিভিন্ন ফি বাবাদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়ের ২ লাখ ৪০ হাজার ২৫৫ টাকা এবং কলেজ ফান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ৮ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা। সর্বমোট ১১ লাখ ৫৫ হাজার ১২১ টাকার কোন হিসাব নেই। ব্যাংক থেকে এসব টাকা উত্তোলন করেছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান,সাবেক এ্যাডহক কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান ও ফরহাদ হোসেন। এসব
টাকা কি কাজে লাগানো হয়েছে জানেন না কেউ। কলেজের অধ্যক্ষের অফিস রুমে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে আছেন মাহবুব আলম। সেখানে বসে আছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক। অপরদিকে কলেজের দোতালায় বসে আসেন সাবেক এ্যাডহক কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমানের নিয়োগ পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমামুল হোসেন। তার সামনে দুটি ও পাশে একটি চেয়ার ফাঁকা পড়ে আছে। জানতে চাইলে সাবেক সভাপতির কথা স্বীকার করে লুৎফর রহমান বলেন, আমি যখন হজ্জে ছিলাম,তখন শুনতে পেলাম আমি আর সভাপতি নেই। টাকা আত্মসাতের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা আত্মসাতের কোন প্রশ্নই ওঠে না। টাকা উত্তোলনের চেকে আমি শুধু সিগনেচার করেছি। আর খরচ করার দায়িত্ব অধ্যক্ষের। এছাড়া মাহবুব আলম যে মামলা করেছিলেন,সেই মামলা চালাতে কিছ খরচ হয়েছে। হাইকোর্টে মামলা চালাতে গেলে তো খরচ হবেই। শিক্ষার্থীদের টাকা কোন কাজে খরচ হয়েছে আমার জানা নাই। যেহুতু সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান মারা গেছে। কাগজ পত্র কোথায় রেখে গেছেন আমার জানা নেই। সাবেক সভাপতি হিসাবে কাগজ পত্র এবং হিসাব আপনার কাছে নেই কেন, জবাবে তিনি বলেন,আমি হজ্জে ছিলাম। তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমামুল হোসেন কিছ হিসাব রাখছে আমার জানা মতে। বর্তমান অধ্যক্ষের চেয়ারে বসা মাহবুব আলম বলেন, এসব দুর্নীতি ঢাকতেই তারা অধ্যক্ষের চেয়ার নিয়ে ঝামেলা করছেন।তারা হাইকোর্টে
রিটের কথা বলছেন, আমি তো এখনো কোন নোটিশ পাই নি। অনিয়মের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী বলেন, টাকা ব্যাংকে জমা আছে। সেই সময় সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানেন টাকার বিষয়ে। তাদের সিগনেচার ছাড়া টাকা উত্তোলন সম্ভব নয়। আর ফরহাদ হোসেন বলেন, কোন সময় কখন টাকা তুলেছি, রেজিষ্টার ছাড়া বলা সম্ভব নয়। বর্তমান এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, কলেজে কোন অনিয়ম দুর্নীতির স্থান নেই। আমি তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে অডিট করাবো।সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সত্যেরপথে.কম/এবি
আপনার মতামত লিখুন :